Table of Contents
Toggle'শোষণ-বৈষম্যবিরোধী বাম গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা কর'
সিপিবির কংগ্রেসে উঠে এসেছে ভাঙন আর দ্বন্দ্বের চিত্র?
কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও জেলা পর্যায়ের কমরেডদের মাঝে তৈরি হয়েছে অবিশ্বাসের দেয়াল?
আদর্শের বদলে ব্যক্তিস্বার্থ ও গোষ্ঠীকেন্দ্রিক রাজনীতি দলে প্রভাব ফেলছে?
একসময় সংগ্রামী ঐতিহ্যের গর্ব করা দল আজ দিশেহারা হয়ে পড়েছে?
এমন কিছু অনুসন্ধানী বক্তব্য থাকলে এই খবরটিকে স্যাটায়ার করা যেত! –বোকা
সিপিবি’র ত্রয়োদশ কংগ্রেসের দ্বিতীয় দিনে কাউন্সিল অধিবেশন
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) আয়োজিত ত্রয়োদশ কংগ্রেসের দ্বিতীয় দিনে শনিবার রাজধানীর বিএমএ মিলনায়তনে কাউন্সিল অধিবেশন চলছে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া এ কংগ্রেসে মূল স্লোগান রাখা হয়েছে— “শোষণ-বৈষম্যবিরোধী বাম গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা কর।”
সিপিবির কংগ্রেস: কমিটির রিপোর্টে মূল বক্তব্য
সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স অধিবেশনে রিপোর্ট উপস্থাপন করেন।
রিপোর্টে বলা হয়—
মুক্তিযুদ্ধের ৫৪ বছর পরও দেশের মানুষের প্রকৃত মুক্তি আসেনি।
১৯৯০ ও ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান সত্ত্বেও গণতন্ত্র ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা হয়নি।
দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি ও পুঁজিবাদী লুটপাটে সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংকট তীব্র হয়েছে।
শ্রমিক, কৃষক, ক্ষেতমজুর, নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত মানুষ জীবিকা নির্বাহে নাভিশ্বাস তুলছে।
সিপিবির কংগ্রেস: মৌলিক পরিবর্তন ছাড়া মুক্তি সম্ভব নয়
রিপোর্টে জোর দিয়ে বলা হয়, “ব্যবস্থার মৌলিক পরিবর্তন ছাড়া মুক্তি সম্ভব নয়।” এজন্য প্রয়োজন—
বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তির উত্থান
গণভিত্তিসম্পন্ন পার্টি গঠন
শ্রেণিসংগ্রাম জোরদার
প্রগতিশীল ঐক্য গড়ে তোলা
রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়, সমাজতন্ত্রই মানুষের মুক্তির একমাত্র পথ।
সিপিবির কংগ্রেস: আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট ও দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতি
সিপিবি’র রিপোর্টে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে বলা হয়—
দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান এ অঞ্চলে অস্থিরতা বাড়াচ্ছে।
মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি, কোয়াডসহ সামরিক জোট দক্ষিণ এশিয়ায় চাপ সৃষ্টি করছে।
ভারত-পাকিস্তান সামরিক উত্তেজনা, চীন-ভারত দ্বন্দ্ব ও রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলছে।
বিএসএফ কর্তৃক সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা, ভারতের পানি ও বাণিজ্য নীতি এবং সাম্প্রদায়িক উসকানি পরিস্থিতি আরও জটিল করছে।
সিপিবির কংগ্রেস: বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের চিত্র
রিপোর্টে বলা হয়—
বিশ্ব রাজনীতির ক্ষমতাকেন্দ্র পরিবর্তিত হচ্ছে।
পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা ও চলমান সামরিক সংঘাত নতুন হুমকি তৈরি করছে।
পুঁজিবাদের অন্তর্নিহিত সংকট, জলবায়ু বিপর্যয় এবং প্রযুক্তির অগ্রগতি বিশ্বকে এক জটিল বাস্তবতায় দাঁড় করিয়েছে।
আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলন ও সর্বহারার আন্তর্জাতিকতাবাদ নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
বাম গণতান্ত্রিক সরকারের লক্ষ্যে নতুন ডাক
রিপোর্টে স্পষ্টভাবে বলা হয়, “আমাদের প্রধান কাজ হলো শোষণ-বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠনের লক্ষ্যে বাম গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা।” এজন্য বাম গণতান্ত্রিক জোটের বাইরের প্রগতিশীল শক্তি, শ্রেণি-পেশার সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গকে যুক্ত করে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার ঘোষণা দেওয়া হয়।
প্রতিনিধি আলোচনায় ৪৪ জেলার অংশগ্রহণ
শনিবারের অধিবেশনে অন্তত ৪৪ জেলার প্রতিনিধি বক্তব্য রাখেন। তারা সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন এবং করণীয় বিষয়ে মতামত দেন। দিন শেষে সংযোজন-বিয়োজনসহ রিপোর্ট অনুমোদন করা হবে।
কমিটি গঠন ও দায়িত্ব বণ্টন
কংগ্রেসে বিভিন্ন কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সভাপতিমণ্ডলী: মোহাম্মদ শাহ আলম, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, শাহাদাৎ হোসেন, লক্ষ্মী চক্রবর্তী, এম এম আকাশ, ডা. দিবালোক সিংহ, এমদাদুল হক মিল্লাত, মনোজ দাস ও অশোক সাহা।
অডিট কমিটি: শেখ হান্নান, শেখ বাহার উদ্দিন মজুমদার, শিবনাথ চক্রবর্তীসহ ৯ জন।
প্রস্তাব বাছাই কমিটি: আলতাফ হোসাইন, গোকুল সূত্রধর মানিক, জুলফিকার আহমেদ গোলাপসহ ১৩ জন।
ক্রেডেনশিয়াল কমিটি: মো. জাহাঙ্গীর, ফররুখ হাসান জুয়েল, বিকাশ দেবসহ ৯ জন।
মুখপাত্রদের সংবাদ ব্রিফিং
কংগ্রেসের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন রুহিন হোসেন প্রিন্স, মিহির ঘোষ ও লাকী আক্তার। শনিবার দুপুরে তারা সংবাদ ব্রিফিং করেন।