চলে গেলেন বঙ্গবালা!

যুক্তি তক্কো গপ্পো’র গান

বোকারা যারা উপরের এই গানটি শুনেছেন, তাঁদের চোখের সামনে নিশ্চয়ই নিচের এই ছবিটি ভাসছে। যিনি আমার কাছে পরিচিত বঙ্গবালা নামে। কথায় আছে না, কিংবদন্তির পাশে আসলে কিংবদন্তিই দাঁড়িয়ে থাকে। গানটির দৃশ্যায়নে ঋত্বিকের পাশে শাঁওলি মিত্র।

নাট্য কিংবদন্তি শম্ভু মিত্র ও তৃপ্তি মিত্রের যোগ্য কন্যা ছিলেন বঙ্গবালা, আমাদের শাঁওলি মিত্র।

পারিবারিক রীতি মেনে দেহ সৎকার শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত মৃত্যু সংবাদ কাউকে জানাতে নিষেধ করেছিলেন শাঁওলি মিত্র।

*** কারা বোকা? বোকাকে জানতে এখানে ক্লিক করুন। ***

১৬ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে এই অমৃতলোক ছেড়ে গেলেন ঋত্বিকের বঙ্গবালা; ঋত্বিক ঘটকের যুক্তি তক্কো আর গপ্পো চলচ্চিত্রে তাকে দেখে আর কখনো ভুলে যাইনি; ফিরে ফিরে বারবার চোখের সামনে হাজির হয়েছে এই বঙ্গবালা।

অথচ আজ সবার চোখের আড়ালেই চিরবিদায় নিলেন নাট্য দুনিয়ার প্রথম সারির অভিনেত্রী শাঁওলি মিত্র। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।

বাংলা থিয়েটারের ইতিহাস

থিয়েটার জগতে বিশেষ করে বাংলা থিয়েটারে শাঁওলি মিত্রের নাম সোনার হরফে লেখা থাকবে; বাংলা থিয়েটারের অন্যতম দিকপাল তিনি; বাংলা থিয়েটারের নব্য ইতিহাস শাঁওলি মিত্রকে ছাড়া লেখা হলে সেটি তার পূর্ণতা পাবেনা; এতোটাই শক্তিশালী এই শিল্পী।

*** বোকার আপডেট পেতে এখানে ক্লিক করুন। ***

আনন্দবাজার জানায়, রবিবার দুপুরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন শম্ভু-তৃপ্তি মিত্রের কন্যা শাওলি মিত্র; হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর; এ দিন দুপুরে সিরিটি মহাশ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

শেষ ইচ্ছাপত্রে ‘নাথবতী অনাথবৎ’ কন্যা জানিয়ে গিয়েছিলেন, দাহকার্যের পর তাঁর মৃত্যুর খবর যেন জানানো হয় সবাইকে; তাঁর শেষকৃত্যে হাজির ছিলেন বিশিষ্ট নাট্যকর্মী এবং রাজনীতিবিদ অর্পিতা ঘোষ; বাবা শম্ভু মিত্রের মতোই মৃত্যুর পরবর্তী নিয়ম বিধি প্রকাশ করে গেলেন তিনি। ফুলের ভারে তাঁর দেহ যেন সেজে না ওঠে এমনই নির্দেশ ছিল তাঁর।

*** বোকার লোকাল ট্রেনে” লেখাটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন। ***

প্রয়াত নাট্যব্যক্তিত্ব শেষ ইচ্ছাপত্রে তাঁর মানস-পুত্র এবং কন্যা সায়ক চক্রবর্তী এবং অর্পিতা ঘোষের উপরেই তাঁর দাহকার্যের ভার দিয়ে গিয়েছিলেন।

মহা-সমারোহ বা পুষ্পস্তবকে তাঁর দেহ সাজিয়ে তোলার বিরুদ্ধে ছিলেন শাঁওলি; অন্যান্য সাধারণ মানুষের মতোই সাদামাঠা ভাবে, সবার অগোচরে চলে যেতে চান তিনি।

শাঁওলি মিত্র

যুক্তি তক্কো আর গপ্পো চলচ্চিত্রের একটি ফটোগ্রাফে শাঁওলি মিত্র।

প্রয়াত পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’ ছবিতে ‘বঙ্গবালা’র চরিত্রে দেখা গিয়েছিল শাঁওলিকে।

অভিনয় করেছেন ‘বিতত বীতংস’, ‘ডাকঘর’, ‘পুতুলখেলা’, ‘একটি রাজনৈতিক হত্যা’র মতো একাধিক কালজয়ী নাটকে।

অভিনয়ের সুবাদেই তিনি ২০০৯ সারে ভারতের পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন; এ ছাড়াও সম্মানিত হয়েছেন, সঙ্গীত-নাটক অকাদেমি (২০০৩) এবং বঙ্গ-বিভূষণ (২০১২) সম্মানে; ২০১১ সালে রবীন্দ্র সার্ধ্বশত জন্মবর্ষ উদযাপন কমিটির চেয়ারপার্সন ছিলেন শাঁওলি মিত্র।

শাঁওলি মিত্রের প্রয়াণে গভীর শোক নেমে এসেছে কালচারাল অঙ্গে, এবং শোক প্রকাশ করছেন, বিভিন্ন দেশবিদেশের নাট্যজন, কবি, সাহিত্যিক, শিল্পীসহ সাধারণ মানুষ।

***পুনঃশ্চ: বোকা তার সকল প্রিয় বো-কাপা-ঠক এবং সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে প্রিয় শিল্পীর প্রয়াণে গভীর শোক ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করছে; ভালোবাসা হে জননী, প্রিয় বঙ্গবালা!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Scroll to Top