কবি পিয়াস মজিদের চার কবিতা

বোকা কবিতা ভালোবাসে। বোকা জানে, পৃথিবীর তাবৎ বোকারাই কবিতা ভালোবাসে। তাই বোকা চক্ষুলজ্জা ভুইলে বো-কাপা-ঠকদের জন্য কবিতা চেয়ে আনে। এইবার বোকা কবিতা এনেছে, কবি পিয়াস মজিদ – এর কাছ থেকে। কবি পিয়াস মজিদ বেশ সাগ্রহে বো-কাপা-ঠকদের তরে তার শেষ লেখা চার কাব্য নিবেদন করেছেন। আর ভালোবাসায় জুড়ে দিয়েছেন সর্ববোকা প্রাণ হৃদয়।

বোকা কোনো কিছু চাইতে গিয়ে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে ফ্যালফ্যাল চেয়ে থাকে। এটাকে বোকার অভিব্যক্তি বলেই ঠাওর হয়! আবার অনেকেই এসব বোকা হাসি হেসে উড়িয়ে দিবেন, বলবেন, আয়রে বোকা, আয়। আর এটাই তো বোকার শক্তি! বোকার মতো সহজবোধ্য আর কে আছে বলো? বোকা আসলে সহজ পাঠ্য! তাই, খুব সহজেই বোকাকে বোকা বলা যায়।

বোকা কি আসলে কোনো কিছুর তোয়াক্কা করে? নাকি বোকা সোজাসাপটা চেয়ে নেয়?

কবি পিয়াস মজিদ তার শেষ লেখা চার কবিতা বো-কাপা-ঠকদের পড়তে দিয়েছেন।

কবি পিয়াস মজিদের কবিতা, শহরবাংলার মানুষেরা

শীতের সকালে শহরের বহু মানুষ খেজুরের রস
পান করে কিন্তু ভেতরে ভেতরে বিশ্বাস করে
ওতে নিপা ভাইরাস আছে।
বিকেলে পথেঘাটে দেদারসে ১২ রকম ভর্তা দিয়ে
পিঠা খেতে খেতে ভাবে,
পিঠার প্রকৃত স্বাদ বাস করে দেশগাঁয়ে।
রাতে গায়ে কম্বল টেনে ঘুমিয়ে পড়ে একদিকে
নাগরিক বেঁচেবর্তে থাকার স্বপ্ন দেখে
আর অন্যদিকে ভাবনায় রাখে,
হঠাৎ মরেটরে গেলে
গ্রামে কবর হলেই বোধ হয়
এই ভেজালের যুগে
অন্তত মৃত্যুর পর অনন্ত শীতকালে
বিশুদ্ধ শিশিরের স্বাদ পাওয়া যাবে।

*** ”কবিতায় সাকিরার বসবাস” লেখাটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন ***

দাঁতের ডাক্তারের চেম্বার থেকে ফিরে

পুরনো দন্তরোগী আমার দাঁতের ব্রিজ হুট করে খুলে গেলে খালি খালি লাগে, বিশেষত হু হু হাওয়া-বওয়া এমন শীতে। সদাশয় ডাক্তার রুমন বণিকের ব্রিজ বিনির্মাণ-প্রক্রিয়ার ফাঁকে দন্তরোগীর মনে আসে- দাঁতের দেশ, নদীর বুক বা মনের মহাদেশ; যেকোনো জায়গায় সদা  সংযোগ-সচেষ্ট মনোহারি  মানুষ 

তার গতির জীবনে বয়ে নিয়ে চলে

অনড়-অটল -স্থবির দাঁড়িয়ে থাকা বহু ব্রিজের বেদনা।

বোকায় যারা লিখতে চান কিংবা আগ্রহ প্রকাশ করছেন, তাদের জানবার সুবিধার্থে এই লেখাটির উপর ক্লিক করুন।

ছোটাছুটির গল্প

সারাদিন ছোটাছুটি করে
বৃহস্পতিবারের রাত
আসন্ন ছুটির দিনের দিকে
কী সুন্দর এলিয়ে থাকে!
মানুষ যেমন ছুটতে ছুটতে
চির-ছুটির বাড়ি চলে।

প্রসঙ্গে কিংবা অনুষঙ্গে: কবি পিয়াস মজিদ

শীত এলে, না গেলেও
যাওয়ার কথা ভাবা যায়
সমুদ্রে, সাজেকে,
গাজীপুরের বনে কিংবা
ইদানীংকার পঞ্চগড়ে, কাজী চা-বাগানে।
আর ব্যাটে-বলে
এসব কোনোটা না মিললেও
রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে তো থাকছেই
নিজস্ব একটা শীতকালীন জাহাঙ্গীরনগর।
ভাস্করের কবিতাতেও দেয়া যায় একচক্কর;
যদিও শীতের কবিতা লিখে লাভ নাই ভাই
শীত তো ভাস্করেরই সুপর্ণা-সম্পত্তি।
যাইহোক, আমাদের বসে বসে দেখা ভাল
ফেব্রুয়ারি আসতে আসতে ফুরিয়ে আসা
ক্রিসমাস, কুয়াশা, অতিব্যবহৃত কম্বলের কান্না।
চিরকাল নরম মাংস, গরম ভাত
আর শক্ত দেয়ালের পক্ষে থেকে
ঋতুনিরপেক্ষ আমরাও তো চেয়েই থাকি
সবসময় গায়ে এসে লাগুক
সহনীয় শীতের কোমল-হাল্কা হাওয়া!

পিয়াস মজিদ-এর বইগুলো আছে রকমারিতে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Scroll to Top